Skip to main content

এক নজরে হরিবোল চলচ্চিত্র


হরিবোল চলচ্চিত্রের গল্প:
একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবার গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃক নিপীড়নের শিকার। নানান চড়াই উৎড়াই শেষে সেই প্রান্তিক পরিবারটি জন্মভিটা থেকে একসময় উচ্ছেদ হয়।

হরিবোল চলচ্চিত্রের প্লট:
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতিত একজন বীরাঙ্গনার জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র বানাতে বলেশ্বর জনপদে যায় একজন তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা। কিন্তু সেই বীরাঙ্গনাকে না পেয়ে সেই জনপদে সে একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের সন্ধান পায়। যে পরিবারটি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃক নিপীড়নের শিকার। ঘটনা পরম্পরায় সেই পরিবারটি একসময় জন্মভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে দেশান্তরি হতে বাধ্য হয়।

জেনরি: ফিচার ফিল্ম

থিম:
প্রচলিত সমাজে সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের নিপীড়নের চিত্র। সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের টিকে থাকার সংগ্রাম এবং দুঃখজনক পরিনতি।

পূর্বকথা:
একটি ট্রিলজি নির্মিত হবে সেই ট্রিলজি' প্রথম পার্ট 'হরিবোল' দ্বিতীয় পার্ট 'সুপর্ণা বসু' তৃতীয় পার্ট '' এই ট্রিলজি থেকেই মূলত টোটাল গল্পটা ধরা পড়বে এই ট্রিলজি' ক্যানভাস এক কথায় বাংলাদেশ প্রতিটি পার্ট বাংলাদেশের গল্প প্রেক্ষাপট আমাদের খুব পরিচিত, চেনা-জানা গল্প এই ট্রিলজি' তিন পর্বের সাথেই এক ধরনের সরাসরি যোগসূত্র থাকবে যদিও তিনটি ভিন্ন ভিন্ন গল্প কিন্তু তিনটি সম্পূর্ণ আলাদা ফিল্ম সব মিলিয়ে এই ট্রিলজি

হরিবোল চলচ্চিত্রের গল্পসংক্ষেপ:
ফারাক্কা বাধের পর পদ্মা নদীসহ এর শাখা-প্রশাখা উপনদীগুলোতে জলপ্রবাহ কমতে থাকে যার প্রত্যক্ষ শিকার বলেশ্বর জনপদ বলেশ্বর নদ পদ্মার একটি শাখা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার বলেশ্বর অংশটি এখন মৃত্যুমুখে পতিত এটাকে এখন বলা হয় মরা বলেশ্বর সেই মরা বলেশ্বর জনপদের একটি গল্প 'হরিবোল'

ঢাকা থেকে বলেশ্বর জনপদে একজন তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতার আগমন ঘটে যিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনা তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার-আলবদর কর্তৃক নির্যাতিত এক নারী' উপর একটি সিনেমা নির্মাণ করবেন সেই নির্যাতিত নারীর নাম সুপর্ণা বসু তরুণ পরিচালক এসকে চৌধুরী বলেশ্বর জনপদে সুপর্ণা বসু সম্পর্কে অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারেন যে, বারো বছর আগে সুপর্ণা বসু প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে গেছে সুপর্ণা বসু ভারতের ঠিক কোথায় গেছে তা গ্রামবাসী ঠিক বলতে পারে না

বীরঙ্গনা সুপর্ণা বসু' উপর তিন বছর ধরে রিসার্স ওয়ার্ক করতে থাকেন এই তরুণ পরিচালক কিন্তু সুপর্ণা বসুকে না পেয়ে স্ক্রিপ্ট ফাইনাল করতে পারেন না গবেষণা কাজে বলেশ্বর জনপদে বারবার আসা-যাওয়া করতে করতে এসকে চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেন- বীরঙ্গনা সুপর্ণা বসুকে নিয়ে সিনেমাটি তিনি এই জনপদেই বানাবেন বলেশ্বর জনপদে ঘুরে ঘুরে তিনি লোকেশান দেখতে থাকেন সিনেমায় চরিত্রায়নের জন্য জনপদের যাদেরকে তার প্রয়োজন, তাদের সাথে তিনি নিবিঢ় সখ্যতা গড়ে তোলেন

ঘটনাক্রমে এই তরুণ পরিচালক একই গ্রামের একজন সংখ্যালঘু প্রান্তিক চাষী' জীবনে ঘটে যাওয়া একটি হৃদয় বিদারক ঘটনাটিও একদিন জানতে পারেন যেখানে নিতাই পারু একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবার পরিবারের কর্তা নিতাই একজন কৃষি শ্রমিক আর তার স্ত্রী পারু একজন গৃহিনী নিতাই পারু' দু'টি জমজ ছেলে লালু ভুলু গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবার হলেও নিতাই-পারু' সংসারে একসময় সুখ ছিল কিন্তু এই পরিবারে আকস্মিক একটি দুর্ঘটনার পর সুখের সেই সংসারে ঘটে নানান বিপত্তি

এক দুপুরে গ্রামের হরিসভার পুকুরে, নিতাই-পারু' দুই জমজ ছেলে লালু ভুলু, সবার অলক্ষ্যে সাঁতার কাটতে গিয়ে জলে ডুবে মারা যায় এই দুর্ঘটনার পর প্রিয় সন্তানদের হারানোর কষ্টে ধীরে ধীরে পারু একসময় পাগল হয়ে যায় স্ত্রী পারু পাগল হবার পর এটাকে কপালের লিখন হিসেবেই মেনে নেয় নিতাই গ্রামের এই প্রান্তিক পরিবারটি তখনো একটা শোকগাঁথা কষ্ট নিয়ে জীবনযাপন করছিল

কিন্তু এক পর্যায়ে গ্রামের নানান কিসিমের কুটক্যাচালে নিতাই' পরিবারটি আক্রান্ত হয় গ্রামীণ সমাজের সেই কুটক্যাচালের আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়- নিতাই তার পাগলী বউ পারু গ্রামে তারা এই বলে একটা শোরগোল তোলে যে- একজন পাগলী' সাথে ঘর করার কোনো অধিকার নিতাই' নাই

গ্রামে নিতাইকে যারা অপছন্দ করে বা শত্রুজ্ঞান করে, তারাই এই অযুহাত নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত দিয়ে তখন একটি অনৈতিক সালিশবিচারের আয়োজন করে গ্রামীণ সেই সালিশবিচারে গ্রাম পঞ্চায়েত সিদ্ধান্ত দেয়- যতদিন পাগলী ঠিক না হবে ততদিন পারু তার ভাই পলটু' সঙ্গে থাকবে নিতাই' সাথে তার পাগলী বউ পারু আর থাকতে পারবে না যা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাপিয়ে দেওয়া এক ধরনের ফতোয়া

একদিন নিতাই' সাথে দেখা করেন তরুণ নির্মাতা এসকে চৌধুরী পারু' ঘটনা পুরোপুরি অবগত হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের এই অনৈতিক সিদ্ধান্তটি নিতাই' মতো এই তরুণ নির্মাতাও মন থেকে মেনে নিতে পারেন না সুপর্ণা বসু' উপর রিসার্স ওয়ার্ক সিনেমার লোকেশান দেখার পাশাপাশি, গ্রাম পঞ্চায়েতের সেই বিচারকদের সাথেও কথা বলেন এসকে চৌধুরী নিতাই-পারু' ঘটনা পরম্পরা সবকিছু জেনে তিনি বুঝতে পারেন- নিতাই-পারু আসলে ভিলেজ-পলিটিক্সের শিকার তথাকথিত গ্রামীণ ফতোয়ার শিকার

এই তরুণ পরিচালকের অনুসন্ধানে ধীরে ধীরে জানা যায় নিতাই পারু' জীবনের বাকি ইতিহাস বীরঙ্গনা সুপর্ণা বসু' উপর গবেষণার পাশাপাশি নিতাই পারু' জীবনের ঘটনা-পরম্পরা নিয়েই হরিবোল চলচ্চিত্রের গল্প

Comments